(ইসলাম গ্রহণ করার কারণে 'হিরা'কে জীবিত অবস্থায় আগুনে জ্বালিয়ে দেয়া হয়। তারই চাচা) জনাব আব্দুল্লাহ ভাই-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাৎকার পর্ব-৪

(ইসলাম গ্রহণ করার কারণে ‘হিরা’কে জীবিত অবস্থায় আগুনে জ্বালিয়ে দেয়া হয়। তারই চাচা) জনাব আব্দুল্লাহ ভাই-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাৎকার পর্ব-৪

(ইসলাম গ্রহণ করার কারণে ‘হিরা’কে জীবিত অবস্থায় আগুনে জ্বালিয়ে দেয়া হয়। তারই চাচা) জনাব আব্দুল্লাহ ভাই-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাৎকার পর্ব-৪

হিরা বললো, তারা তো ইসলামকে ঘৃণা করে। তারা কখনোও ইসলাম গ্রহণ করবে না। সে বাড়িতে বলেছিলো, মাওলানা সাহেব তাকে বলেছিলেন, আল্লাহ তা’আলা তাদের অন্তরকে ইসলামের জন্য খুলে দেবেন। তাহলে তারা কুফর শিরককেও ঘৃণা করবে। যেভাবে এখন ইসলামকে ঘৃণা করে। মাওলানা সাহেব বললেন, তুমিও তো এক সময় ইসলামকে ঘৃণা করতে যেভাবে এখন কুফরকে ঘৃণা করো। আল্লাহর কাছে দো’আ এবং আমার কাছে অঙ্গিকার করো যে, তুমি বাড়ি গিয়ে তোমার পরিবারকে দোযখ থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করবে। যদি তুমি এই নিয়তে বাড়ি যাও তাহলে প্রথমত: আল্লাহ্ তা’আলা তোমাকে হেফাজত করবেন। আর যদি তোমাকে কষ্টবরণ করতে হয় তাহলে কষ্ট স্বীকার করতে হবে। যা আমাদের নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আসল সুন্নত। যদি তোমাকে তোমার পরিবার মেরেও ফেলে তাহলে, তুমি শহীদ হয়ে যাবে এবং শাহাদাত জান্নাতের সংক্ষিপ্ত রাস্তা। আমার বিশ্বাস যে, তোমার শাহাদাত তোমার পরিবারের হেদায়াতের কারণ হবে।

যদি তোমার পরিবারকে দোযখ থেকে বাঁচানোর জন্য তোমার জীবনও দিয়ে দাও এবং তারা হেদায়েত পেয়ে যায়, তাহলে তোমার জন্য সহজ ব্যবসা হবে। মাওলানা সাহেব বলেন, তিনি তাকে দুই রাকাত নামায পড়তে বলেছিলেন এবং তাদের জন্য। হেদায়েতের দু’আ এবং দাওয়াত দেয়ার নিয়ত করে বড়ি যেতে বলেছিলেন।

তারপর দিল্লী থেকে ফুলাত এবং ফুলাত থেকে সে বাড়ি এলো। তাকে দেখে আমাদের গায়ে আগুন ধরে গেলো। আমি তাকে জুতা দিয়ে মারপিট করলাম। সে এ কথা তো বলেনি যে সে কোথায় ছিলো। তবে বললো, আমি মুসলমান হয়ে গেছি। এখন আমাকে ইসলাম থেকে কেউ সরাতে পারবে না। আমরা তার উপর কঠোরতা করি আর সে উল্টো কেঁদে কেঁদে আমাদেরকে মুসলমান হতে বলে।

তার মা অসুস্থ ছিলো। দুই মাস পর সে মারা যায়। সে তার মাকে দাফন করানোর জন্য মুসলমানদের ডেকে বলছিল যে, আমার মা আমার সামনে কালেমা পড়েছেন। তিনি মুসলমান হয়ে দুনিয়া ত্যাগ করেছেন।

তাই তাকে জ্বালানো-পোড়ানো অন্যায় ও যুলুম হবে। কিন্তু আমরা তাকে কীভাবে দাফন করি। তাকে আমরা জ্বালিয়ে দিলাম। প্রতিদিন এ নিয়ে আমাদের বাড়িতে ঝগড়া-ফাসাদ হতো। সে কখনো তার ভাইকে, কখনো তার বাবাকে মুসলমান হতে বলতো। আমরা তাকে তার নানির বাড়ি পাঠিয়ে দেই। তার মামা অবশেষে অপারগ হয়ে আমাকে ও ভাইয়াকে খবর দিয়ে বললো যে, এই বিধর্মীকে আমাদের এখান থেকে নিয়ে যান, প্রতিদিন আমরা তার সঙ্গে ঝগড়া করতে করতে হাঁপিয়ে উঠেছি। আমি বজরং দলের নেতাদের সাথে পরামর্শ করলাম। তারা মেরে ফেলার পরামর্শ দিলো। আমি তাকে গ্রামে নিয়ে আসি। একটি নদীর কিনারায় পাঁচ ফুট একটি গর্ত খনন করি। আমি এবং আমার বড় ভাই তাকে বোনের বাড়ি নিয়ে যাওয়ার ছলনা করে সে দিকে নিয়ে চললাম।

সে মনে হয় স্বপ্নে জানতে পেরেছিলো। সে গোসল করে নতুন কাপড় পরে আমাকে বললো যে, চাচা। আমাকে শেষ দুই রাকাত নামায পড়তে দিন। দ্রুত নামায আদায় করে বিয়ের কনে সেজে খুশি মনে আমাদের সাথে চলতে লাগলো। লোকালয় থেকে অনেক দূরে এবং রাস্তা থেকে অনেকটা সরে আসার পরও সে একটু জিজ্ঞাসাও করেনি যে, আপনার বোনের বাড়ি কোথায়? একেবারে কাছে গিয়ে হেসে তার বাবাকে জিজ্ঞাসা করলো, আপনি কি আমাকে আপনার বোনের বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন, না মুত্যুর বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন?

আমার কাছে একটি ব্যাগে পাঁচ লিটার পেট্রোল ছিলো। হিরার পিতা এবং আমি এই জালেম চাচা দু’জনে সাথে করে সেই সত্য মুমিনা আশেকা শহীদাকে নিয়ে গর্তের নিকট গেলাম। যা একদিন পূর্বে খনন করে রেখেছিলাম। এই হিংস্র চাচা এই বলে তাকে গর্তে ঠেলে দিলো যে, আমাদেরকে নরক বা দোযখ থেকে কি বাঁচাবি। যা নিজেই তার মজা দেখ। গর্তে নিক্ষেপ করে তার শরীরে সমস্ত পেট্রোল ঢেলে দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দিলাম। আমার ভাই কাঁদতে কাঁদতে সেই গর্তের দিকে তাকিয়ে থাকলো।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *