নওমুসলিমা বোন জামিলা পুষ্প এর সাক্ষাৎকার শেষ পর্ব।

নওমুসলিমা বোন জামিলা পুষ্প এর সাক্ষাৎকার শেষ পর্ব।

নওমুসলিমা বোন জামিলা পুষ্প এর সাক্ষাৎকার শেষ পর্ব।

ঈমানের দাওয়াত দিতে পারি সেই হিম্মত আমাকে দাও। আমার বোন হিন্দু। কিন্তু সবগুলো কালেমা ও দরূদ জানে। সেও তার ভগ্নিপতির এই দুর্গতি দেখে ব্যথিত ছিল। সে দৈনিক তাকে বলে, তুমি মুসলমান হয়ে যাও। তোমার জীবন সুন্দর হয়ে যাবে। দেখ, আমার বোন মুসলমান হওয়ায় তার জীবন আলোকিত হয়েছে। সে দৈনিক বলত। একদিন দেখি কি, আমার স্বামীকে সে জোর করে আমার ঘরে ধরে এনেছে। আমি নারাজ হয়ে বলি, তুই এই মদ্যপ- মাতালটাকে এখানে কেন এনেছিস?

সে বলল, ইনি মুসলমান হবার জন্য প্রস্তুত। গাফফার মনযিলের মসজিদে বেলা ১০টার সময় জনৈক মাওলানার বয়ান চলছিল। তাকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে কালেমা পড়ানো হয়। সেখানে মাওলানা সাহেব আমাদের বিয়ে পড়ান। তাঁরই বয়ান ছিল। তিনি কালেমা পড়িয়ে চলে যাচ্ছিলেন। আমি ছিলাম ক্ষিপ্ত। আমার ছেলে জুলফিকার মাওলানা সাহেবকে বললেন, আমার মা জামীলাকে বোঝান। তিনি পর্দা করে বসে আছেন। পর্দা ছাড়ুন এবং সব রাগ ঝেড়ে ফেলুন। মাওলানা সাহেব আমাকে বোঝালেন। আমি বুঝলাম। কিন্তু ২৫ বছর যাবত পৃথক বসবাস করে আসছি। আশ্চর্য রকমের আড়াল কাজ করে। সংকোচ ও জড়তা ঘিরে ধরে। এর ভেতর দিয়ে যতটা পারি তার খেদমত করছি। আজ ২২ দিন হল মদ স্পর্শও করেনি। মাশাআল্লাহ! সে এখন পাঁচ ওয়াক্ত মসজিদে যাচ্ছে।

আমি মুসলিম হলেও আমার সন্তানরা হিন্দুই থেকে গেছে। কারণ, কোন মুসলমান আমাকে কিছু বলেনি। সত্যি বলতে কি হাজী কলনিতে আসার পর আমি নিজে প্রকৃত মুসলমান হয়েছি। তেমনি আমার দুই ছেলে বিসমিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ সব পড়ে। বড় বউ খুব কট্টর। কিন্তু ছোট বউ খুব নরম দিলের মানুষ। ছোট ছেলে আমার সঙ্গে কাজ করে। ফ্যাক্টরি, দোকান সবকিছু সেই সামলায়।

আমার এই পুত্র হিসেবে কথিত জুলফিকার ও পুত্রবধূ আফসানা তুলনা বিহীন ছেলে বউ। আমি তাদের সাথে হজ্বও করেছি।

আমি একবার একটি স্বপ্ন দেখলাম যে আমার একটি কামরা যা অত্যন্ত সুন্দর আশ্চর্য ধরনের রঙের বাহার যার সৌন্দর্য বর্ণনাতিত। সেখানে আমি এবং আরেকজন মসজিদে পড়ে আছি। অপরিসীম সুন্দরী বর্ণনাতিত সৌন্দর্যের অধিকারী মহিলা। হীরা, জহরত ও মতির থালা হাতে নিয়ে বসে আছে।

দ্বিতীয় স্বপ্ন এই যে আমি সীমাহীন উচ্চতায় দাঁড়িয়ে আছি। অত্যন্ত শ্বেত শুভ্র পোশাক পরিহিত আমার চতুর্দিকে স্বচ্ছ ও নির্মল পানি। আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। এর ব্যাখ্যা কি আল্লাহই ভালো জানেন। কিন্তু আমি অত্যন্ত প্রশান্তি অনুভব করেছি।

একবার দেখি কি সমতল ভূমি আমি আর আমার পুত্র আমার সাথে এমন সময় ভীষণ ভূমিকম্প হল। ভয়াবহ রকমের ভূমিকম্প। আমি সূরা ফাতিহা পড়তে লাগলাম সাথে সাথে ভূমিকম্প থেমে গেল।

সকলের প্রতি আমার পয়গাম হলো একে অন্যের কল্যাণ কামনা করি। সকলের সাথে মিলে মিশে থাকি। হিন্দু সম্প্রদায় মুসলমান দর্শন সম্পর্কে জানতে আগ্রহে অস্থির। কাছাকাছি আসি। লোকে দলে দলে ইসলামে আকৃষ্ট হয়ে চলে আসবে।

পরিশেষে আমার আবেদন মুসলমানরা যেন তাদের রক্তের সম্পর্কের ভাই-বোনদের হেদায়েতের প্রত্যাশায় রাতের শেষে একাগ্র চিত্তে দু ফোঁটা অশ্রু যেন আল্লাহর দরবারে ফেলে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *