বাবরি মসজিদে আঘাতকারী বলবীর সিং এর ইসলাম গ্রহণের কাহিনী (শেষ পর্ব)

বাবরি মসজিদে আঘাতকারী বলবীর সিং এর ইসলাম গ্রহণের কাহিনী (শেষ পর্ব)

মুসলমানের কাছে আমার একটিই নিবেদন আর তা হলো, নিজের জীবনের লক্ষ্য কি তা জেনে এবং ইসলামকে মানবতার আমানত মনে করে একে মানুষের কাছে পৌঁছে দিই, পৌঁছে দেয়ার কথা ভাবি। কেবল ইসলামের প্রতি দুশমনীর কারণে তার থেকে বদলা নেবার প্রতিশোধ গ্রহণে উৎসাহিত না হই।

আমি একথা একেবারে আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি- বাবরী মসজিদ শাহাদতে অংশ গ্রহণকারী প্রত্যেক শিবসেনা, বজরং দলের সদস্যসহ সকল হিন্দু যদি এটা জানত যে,
ইসলাম কী?
মুসলমান কাকে বলে?
কুরআনুল করীম কী?
মসজিদ আসলে কোন বস্তুর নাম?
তাহলে তাদের সকলেই মসজিদ নির্মাণের কথা ভাবতে পারত, মসজিদ ভাঙ্গার প্রশ্নই উঠতে পারতো না।

আমি আমার প্রবল প্রত্যয় থেকে বলছি তারা যদি ইসলামের প্রকৃত সত্য ও মর্মবাণী জানতে পারে এবং জানতে পারে যে, ইসলাম (কেবল মুসলমানদের নয়) আমাদেরও ধর্ম, এটি আমাদের দরকার, তাহলে তাদের প্রত্যেকেই নিজ খরচে বাবরী মসজিদ পূণর্বার নির্মাণ করাকে নিজেদের সৌভাগ্য ভাববে।

সে যাকগে, কিছু লোকতো এমন আছে যারা মুসলমানদের প্রতি শত্রুতায় বিখ্যাত, কিন্তু এখন একশ কোটি হিন্দুর মধ্যে এমন লোক এক লক্ষও হবে না। সত্য কথা বলতে কি, আমি বোধ হয় বাড়িয়ে বলছি, ৯৯ কোটি ৯৯ লক্ষ লোক তো আমার পিতার মত, যারা মানবতার বন্ধু বরং ইসলামী নীতিসমূহকে তারা অন্তর দিয়েই পছন্দ করে। আমার পিতা (কাঁদতে কাঁদতে) কি স্বভাবগতভাবে মুসলমান ছিলেন না? কিন্তু মুসলমানরা তাঁকে দাওয়াত না দেয়ার কারণে তিনি কুফরী অবস্থায় মারা গেছেন। আমার সঙ্গে, আমার পিতার সঙ্গে মুসলমানদের এ কত বড় জুলুম।

এ কথা সত্যি যে, বাবরী মসজিদ যে শহীদ করেছে সেই আমার থেকে বড় জুলুমকারী জালিম আর কে হতে পারে? কিন্তু আমার চেয়েও বড় জালিম তো সেই সব মুসলমান যাদের দাওয়াতের ক্ষেত্রে অলসতা ও অবহেলার দরুন আমার এমন প্রিয় বাবা আজ দোযখে চলে গেছেন। মাওলানা সাহেব সত্য বলেছেন, আমরা যারা বাবরী মসজিদ শহীদ করেছি তারা না জানার কারণে এবং মুসলমানদের না চেনার দরুন এমন জুলুম করেছি। আমরা অজানা ও অজ্ঞতার দরুন এ ধরনের জুলুম করেছি এবং মুসলমানেরা জেনে বুঝে তাদের দোযখে যাবার উপলক্ষে পরিণত হচ্ছে। আমার পিতার কুফরী অবস্থায় মারা যাবার কথা যখন রাত্রে মনে হয় তখন আমার ঘুম পালিয়ে যায়। সপ্তাহের পর সপ্তাহ আমার ঘুম আসে না। ঘুম আনবার জন্য আমাকে ঘুমের বড়ি খেতে হয়। হায়। মুসলমানদের যদি এই ব্যথার অনুভূতি হতো।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *