আব্দুর রহিম গ্রীনের ইসলামে ফেরার গল্প
বৃটিশ নাগরিক আব্দুর রহিম গ্রিনের জন্ম তানজানিয়ায়। খ্রিস্টিয় নাম ছিল এন্থনি গ্রিন। তার মা ছিলেন রোমান ক্যাথলিক। বলে নেয়া ভালো খ্রিস্ট ধর্মের প্রধান তিন শাখার একটি হচ্ছে রোমান ক্যাথলিক যার প্রধান কার্যালয় ভ্যাটিকান সিটিতে এবং প্রধান ধর্মগুরুকে ‘পোপ’ নামে অবিহিত করা হয়।
রোমান ক্যাথলিকের মতে পোপ হচ্ছেন সকল গির্জার প্রধান এবং যিশুর প্রতিনিধি। তারা মনে করেন পোপ নির্দেশিত সকল বাণী নির্ভুল এবং খ্রিস্টধর্ম বিশ্বাস ও জ্ঞান অর্জনে পোপ কোন ভুল করতে পারেন না।
গ্রীনের মা চাইতেন তার দুই ছেলে ক্যাথলিক ধার্মিক হোক। এই কারনে ছোটবেলায় ইংল্যান্ডে ক্যাথলিক ধর্মগুরুদের দ্বারা পরিচালিত একটি স্কুলে ভর্তি করে দেন। স্কুলে পাঠানোর আগে ভাবলেন সন্তানদের কিছু ধর্মীয় নিয়মকানুন এবং প্রার্থনা শিখিয়ে দেয়া যাক। এক রাতে দুই ভাইকে নিয়ে তিনি প্রার্থনায় বসলেন। “হে মেরি, ঈশ্বর মাতা, তুমি আমাদের উপর তোমার পুত্র যীশুর মাধ্যমে দয়া করো।”ক্যাথলিকদের বহুল প্রচলিত প্রার্থনা এটি।
ঐ বয়সে গ্রীনের মনে উদয় হলো, ঈশ্বরের আবার মা থাকেন কি করে? ঈশ্বর তো এমন একজন হওয়া উচিত যার শুরু নেই, শেষও নেই। তাহলে তার জন্মদাত্রি মা আসে কোথা থেকে। ছোট্ট গ্রীনের মনে হলো, যে মা ঈশ্বরকে জন্ম দিয়েছেন তিনি না জানি নিজে কত বড় ঈশ্বর। সে হিসেবে মাতা মেরি আরও বড় খোদা। এটি ছিল গ্রিনের মনে খ্রিস্টান ধর্ম নিয়ে তৈরী হওয়া প্রথম জিজ্ঞাসা।
স্কুলে পড়াশুনা করতে গিয়ে আরও নানা প্রশ্নের উদয় হলো। স্কুলের একটি নিয়ম ছিল সেখানকার ধর্মগুরুর সামনে নিজের সকল পাপ স্বীকার করতে হবে। বছরে অন্তত একবার এই কাজ করতে হতো। বলা হতো সব পাপ স্বীকার না করলে ঈশ্বর নাকি ক্ষমা করবেন না। গ্রীনের মাথায় ঢুকতো না সব পাপ একজন মানুষের কাছে স্বীকার করতে হবে কেন? ১২-১৩ বছর বয়সের একটি বালককে যদি সব পাপ স্বীকার করতে বলাও হয় সে কি সব স্বীকার করবে? তাও আবার তাদের আবাসিক শিক্ষকের সামনে!!
একদিন স্কুলের এক আবাসিক শিক্ষককে বলেও ফেললেন, “আমায় কেন আপনাদের সামনেই দোষ স্বীকার করতে হবে? কেন সরাসরি ঈশ্বরের কাছেই নয়? অথচ আমাদের পবিত্র বাইবেলে আছে স্বর্গীয় পিতার নিকট সকল অপরাধের মার্জনা চাইতে। উত্তরে শিক্ষক বললেন, ” তুমি চাইলে সরাসরি ঈশ্বরের নিকট বলতে পারো। তবে নিশ্চিত হবার সুযোগ নেই তিনি তোমায় ক্ষমা করবেন কিনা। কিন্তু আমরা তোমাদের হয়ে ঈশ্বরের নিকট ক্ষমা চাইলে নিশ্চিত তিনি ক্ষমা করবেন।